এই হাত দু’টো কবিতা লেখার জন্য সৃষ্টি হয়নি

এই হাত দু’টো কবিতা লেখার জন্য সৃষ্টি হয়নি।
এই মস্তিষ্ক কখনো বুদ্ধিবিক্রীর বেশ্যাবৃত্তি করতে চায়নি।
এই মনটা চেয়েছিল নির্ঝঞ্জাট একটা কর্মজীবী জীবন।
হাতুড়ী-বাটাল বা অতি সাধারণ আর কোন যন্ত্রপাতি
ব্যবহারে, নিতান্তই ছা-পোষা জীবিকার কোন আয়োজন।
মনটা চেয়েছিল, প্রকৃতির মাঝে একাকী, নিভৃত, একটা জীবন।

কিন্তু কোলাহোল থেকে বেঁচে থাকা আর হলো না -

অগত্যা কলম ধরতেই হলো, নাহলে বন্দুক ধরতে হতো।
যারা কথা কইতে জানতো, আর সত্যিই কিছু করতে পারতো,
তারা যখন প্রাপ্তির নেশায় চুর - ব্যস্ত টাকা-আনা-পাইয়ের হিসাবে।
তখন তাকেই হাতিয়ার তুলে নিতে হয়, যে ছিল পেছনের সারিতে -
মুখচোরা, একেবারেই আড়ালে থাকতো যে, তাকেই মুখর হতে হলো।
মুনাফিক্বির বিপরীতে সোচ্চার প্রতিবাদের শাব্দিক প্রয়াসে!
কতগুলো মানুষ যা বলে তা করে না, কিংবা যা করে তা বলেও না -
অথচ প্রতিবেশের তাবদ মানুষকে তারা "শ্রমিক-পিঁপড়া” জ্ঞান করে।
বুদ্ধি আর কথা বিক্রী করা বিনা পুঁজির ব্যবসার দাপটে -
সারা পৃথিবীকে পদানত রাখতে চায় তারা। কথার মারপ্যাঁচ আর
দ্ব্যর্থতায় - গণমানুষকে বোকা বানায় তারা প্রতিবার, বার বার।
তাদেরই রুখতে এই হাত দু’টো হাতুড়ি-বাটাল ছেড়ে কলম ধরেছে।
তাদেরই রুখতে এই হাত দু’টো অবশেষে কবিতাও ধরেছে!!

Read Comments
  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

নাগরিক বনকন্যা

সকালে ঘুম থেকে উঠে, বাইরে আসলাম, রাস্তায়।
কেউ একজন দাঁড়িয়ে, হয়ত কারো অপেক্ষায়।
সুললিত কণ্ঠ, পথিক তুমি কি পথ হারাইয়াছ?
-হারাবো কোথায়, আমিতো দেই নি এখনো পদক্ষেপ
দাঁড়িয়ে গোড়ায়, নিজ দূয়ারের।
পষ্ট করে দেখি…ওমা, চোখে জিজ্ঞাসা, অপরূপ সুন্দরী,
-ও হ্যাঁ, মাত্র হারালাম…সবই, স্থানু আমি।

বৃষ্টির ছাট, নর্দমা আর জমে থাকা বরষা, একাকার।

কার্নিশের আশ্রয়ে ভেজা কাক নয়, আমার কল্পনার বনকন্যা।
আবার পথে নামে নাগরিক বন-দুহিতা।
এক হাতে টিফিন কেরিয়ার, আরেক হাতের তালুকে বানিয়ে ছাতা।

এক ইট দুই ইট লাফিয়ে, পৌঁছি গলির মোড়ে

কপালকুণ্ডলা এখানে দাঁড়িয়ে, একটু তোলা পাজামা
কৃতজ্ঞতা বর্ষা তোমায়, উঁকি দেয় উন্মুক্ত সুডৌল পা
মেঘের উপঢৌকনে, নাকি অন্তরের নির্যাসে
গাল দু’খানি ভেজা ভেজা।

নাগরিক মূল্যবোধের তাড়া, নিচতলা-উপরতলা বৈষম্য

পাছে লোকে কিছু বলে-মানসিক বৈকল্য
কল্পনায় আলাপচারিতাই শুধু, হয়না হাত দু’টো ধরা
কিংবা পাশাপাশি খানিকটা পথচলা!

ওয়াটারপ্রুফ বর্ষাতি ভেদ করে ভিজি আমি একেলা

যেমন সড়ক দ্বীপের টোকাই শিশুরা, গা খোলা।

ভেজা আকাশ কুসুম স্বপ্ন তাড়িয়ে,

শুকনো বাস্তবে ভাদ্দুরে গরমে কাঁপি।
বদ্ধ জলের শহরে হিমু নই, নবকুমার আমি
কাজ ফেলে শুধুই, ছপাত ছপাত হাঁটি।

Read Comments
  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS